বাংলাদেশে স্টারলিংক: ইন্টারনেটে নতুন দিগন্ত

thenewyorktimes
0

 

বাংলাদেশে স্টারলিংক: ইন্টারনেটে নতুন দিগন্ত

বাংলাদেশে স্টারলিংক: ইন্টারনেটে নতুন দিগন্ত


ঢাকার ব্যস্ত রাস্তা থেকে দূরের গ্রামে ইন্টারনেট পৌঁছানোর স্বপ্ন কি সত্যি হতে চলেছে? স্টারলিংক, ইলন মাস্কের বিপ্লবী স্যাটেলাইট ইন্টারনেট প্রকল্প, ২০২৫ সালের মার্চের শেষে বাংলাদেশে কাজ শুরুর অনুমোদন পেয়েছে। এই লেখায় আমরা দেখব এটি আপনার জন্য কী বদল আনতে পারে, কীভাবে জীবনকে নতুন রূপ দেবে এবং কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ—সবই সহজ, আকর্ষণীয় এবং তথ্যবহুল ভাষায়।


বড় খবর: বাংলাদেশে স্টারলিংকের আগমন

২৯ মার্চ, ২০২৫-এ বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) স্টারলিংককে ব্যবসার নিবন্ধন দেয়। এরপর বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এটি অনুমোদন করে। সামাজিক মাধ্যমে খবর, ৯ এপ্রিল থেকে পরীক্ষামূলক সেবা শুরু হবে এবং তিন মাসের মধ্যে পুরোদমে চালু হবে। এই দ্রুত পদক্ষেপ বাংলাদেশের প্রযুক্তি গ্রহণের তৎপরতা আর স্টারলিংকের লক্ষ্যকে তুলে ধরে।

কেন এখন? ঢাকায় আসন্ন বিনিয়োগ সম্মেলন আর আমেরিকার শুল্ক চাপের মধ্যে অর্থনীতি জোরদার করতে এটি একটি বড় পদক্ষেপ।


স্টারলিংক কী নিয়ে আসছে?

স্টারলিংক সাধারণ ইন্টারনেট নয়। এটি পৃথিবীর কাছাকাছি কক্ষপথে থাকা হাজারো ছোট স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দ্রুতগতির ইন্টারনেট দেয়—৫০ থেকে ১৫০ এমবিপিএস। বাংলাদেশে যেখানে গ্রামে ফাইবার ক্যাবল পৌঁছানো ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ, সেখানে এই স্যাটেলাইট সমাধান একটি আশীর্বাদ। এর সুবিধাগুলো হলো:

  • গ্রামে সংযোগ: ৬০% এর বেশি মানুষ শহরের বাইরে থাকেন, যেখানে ইন্টারনেট দুর্বল। স্টারলিংক তা বদলে দেবে।
  • দুর্যোগে স্থিতি: বর্ষা বা বন্যায় সংযোগ বিঘ্নিত হয়। স্যাটেলাইট তা থেকে মুক্ত।
  • বিশ্বের সঙ্গে যোগ: শিক্ষা থেকে ব্যবসা—সবার জন্য নতুন দরজা খুলবে।

একজন রংপুরের কৃষক ফসল বিক্রি বা কক্সবাজারের ছাত্র ভার্চুয়াল ক্লাস—এমন দিন বেশি দূরে নয়।


বাস্তব প্রভাব: জীবন বদলের গল্প

ধরুন, সিলেটের এক গ্রামের শিক্ষিকা সালমা। তার ছাত্ররা ইন্টারনেটের অভাবে ডিজিটাল শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। স্টারলিংক এলে সে লাইভ ক্লাস নিতে পারবে। অথবা বরিশালের ব্যবসায়ী রহিম—ইন্টারনেটের সীমাবদ্ধতায় তার ক্রেতা কম। স্যাটেলাইট ইন্টারনেট তাকে বিশ্ব বাজারে নিয়ে যাবে।

নাইজেরিয়া বা ফিলিপাইনে স্টারলিংক গ্রামীণ জীবন বদলে দিয়েছে। বাংলাদেশও সেই পথে।


চ্যালেঞ্জ কী?

সবকিছু সহজ হবে না। টার্মিনালের দাম (বিশ্বে ৪৯৯ ডলার) আর মাসিক ফি (৯৯ ডলার) অনেকের জন্য ব্যয়বহুল হতে পারে, যদি ভর্তুকি না থাকে। গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপন, ঘনবসতি ও বর্ষার প্রভাবও বাধা। তবে সরকারের সমর্থন আর স্টারলিংকের চাকরি সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি আশা জাগায়।


এটি আপনার জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ?

শহরে হোক বা গ্রামে, স্টারলিংক আপনাকে ছুঁবে। শহরে দাম কমতে পারে, গ্রামে নতুন সুযোগ আসবে। ১৬ কোটি মানুষের দেশে, যেখানে ইন্টারনেট ৪০% এর কাছে পৌঁছেছে, এটি একটি ডিজিটাল লাফ।


ভবিষ্যৎ: নতুন যুগের সূচনা

৯ এপ্রিল থেকে পরীক্ষা শুরু, মাঝ বছরে পূর্ণ সেবা—স্টারলিংক বাংলাদেশে ঢেউ তুলবে। স্কুল ডিজিটাল হবে, টেলিমেডিসিন বাড়বে, ব্যবসা বড় হবে। বিটিআরসির দ্রুত অনুমোদন বলছে—বাংলাদেশ প্রস্তুত।

আপনার মতামত কী? আপনার এলাকায় এটি কী বদলাবে? মন্তব্যে জানান

Tags

Post a Comment

0 Comments
Post a Comment (0)
To Top